দেবীত্বের ক্রমবিন্যাসের একদিকে যেমন রয়েছেন ভয়ংকর দেবীমূর্তি, তেমনই অন্য প্রান্তে রয়েছেন এক অপরূপ সুন্দরী দেবীপ্রতিমা। মুণ্ডমালা তন্ত্র অনুসারে দশমহাবিদ্যা হলেন কালী, তারা, ষোড়শী, ভৈরবী, ভুবনেশ্বরী, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, বগলা, মাতঙ্গী ও কমলাকামিনী। তবে মহাবিদ্যার সংখ্যা নিয়ে মতান্তর রয়েছে। এমনকি একটি মতে মহাবিদ্যার সংখ্যা ২৭ বলা হয়েছে। দুর্গা, কামাখ্যা ও অন্নপূর্ণাও মহাবিদ্যা। মালিনী বিজয় গ্রন্থের মতে, মহাবিদ্যা হলেন কালী, নীলা, মহাদুর্গা, ত্বরিতা, ছিন্নমস্তিকা, বাগ্বাদিনী, অন্নপূর্ণা, প্রত্যঙ্গিরা, কামাখ্যাবাসিনী, বালা, মাতঙ্গী ও শৈলবাসিনী। মহাবিদ্যা বা দশমহাবিদ্যা সনাতন ধর্মে দেবী অর্থাৎ দিব্য জননী নিরাকার আদ্যাশক্তি পার্বতীর সাকার দশটি বিশেষ রূপের সমষ্টিগত নাম। এই দশটি রূপ হল দেবী পার্বতীর দশটি স্বরূপ।
‘দশে মহাবিদ্যা’ গ্রন্থটিতে রয়েছে এই দশ রূপের দশটি গল্প। উক্ত গল্পগুলিতে অপশক্তির করাল ছায়ায় ভিত সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে গল্পের চরিত্ররা, সাথে পাঠকও। কিন্তু মহাবিদ্যার দেবীরা আসলে যাই হোন তারা তো সকলেই বিশ্বজননী মহামায়ার ভিন্ন-ভিন্ন রূপ। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন-ই যার পরিচয়, সেখানে সাধ্য কি অসৎ সাধকের সে ক্ষমতাকে জগতের ক্ষতি সাধনে ব্যবহার করে ? এই গ্রন্থের গল্পগুলিতে সেই বিষয়গুলিই দেখানো হয়েছে। তন্ত্র-মন্ত্র-ভয় এই তিনটি বিষয়কে উপজীব্য করে গড়ে ওঠা এই কাহিনীগুলি পাঠককে শিহরিত করবে এই আশা রাখি।